সৌদি সরকারের নিষেধাজ্ঞা : ৫ বছরের আগে দ্বিতীয় হজ্জ্ব করা যাবে না
পাঁচ বছরের
মধ্যে কমপক্ষে একবার হজ্জ্ব করেছেন, এমন হাজীরা এবার আর
হজ্জ্ব করতে পারবেন না। সৌদি সরকার এক আদেশে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ সংক্রান্ত একটি ফ্যাক্সবার্তা দেশের সংশ্লিষ্ট দফতরে এসেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের মুসলমান এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন।এদিকে চলতি বছরের হজ্জ্ব প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
গত সোমবার মন্ত্রিসভায় প্যাকেজটি অনুমোদন হওয়ার পর শুক্রবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের
মাধ্যমে প্যাকেজ প্রকাশ করা হয়। এতে সরকারি ব্যবস্থাপনায়
দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। প্রথম প্যাকেজে মোট
ব্যয় ধরা হয়েছে কোরবানি বাদে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৭ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজের ব্যয় ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২ টাকা। এর সঙ্গে প্রত্যেক হজ্জ্বযাত্রীকে কোরবানির খরচ বাবদ ৯ হাজার ৪৫০ টাকা আলাদাভাবে সঙ্গে
নিতে হবে। বেসরকারি এজেন্সিগুলো সরকারি প্যাকেজ মূল্যকে সর্বনিম্ন ব্যয়
ধরে আলাদা আলাদা প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে। উভয় ব্যবস্থাপনার হজ্জ্বযাত্রীদের
আগামী ৩০ মে তারিখের মধ্যে নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা জমা করতে হবে। এর মধ্যে এজেন্সিগুলোকে মোয়াল্লেম ফি জমা দিয়ে ব্যাংক হিসাব বিবরণীসহ হজ্জ্বযাত্রীদের
নাম-ঠিকানা জমা দিতে হবে।
সৌদি সরকারের
নিষেধাজ্ঞা : পাঁচ বছরের আগে দ্বিতীয়বার হজ্জ্ব করা যাবে না, মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি সরকার। গত বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয় সৌদি সরকারের নিষেধাজ্ঞার ফ্যাক্স পেয়েছে বলে সাংবাদিকদের
জানিয়েছেন হজ্জ্ব অফিসার (অতিরিক্ত সচিব) বজলুল হক বিশ্বাস। এর আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের হজ্জ্ব কাউন্সিলর (যুগ্ম সচিব) আসাদুজ্জামানের কাছে
এ নির্দেশনা পাঠান।
বজলুল হক বিশ্বাস
সাংবাদিকদের জানান, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব দেশের জন্যই এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় কোনো কারণ উল্লেখ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সম্ভবত হজ্জ্ব মৌসুমে হাজীদের চাপ কমানোর জন্যই সৌদি সরকার এটা করেছে। এছাড়া হজ্জ্ব ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনার জন্যও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। তিনি বলেন, যেসব হাজী গত পাঁচ বছরের মধ্যে কমপক্ষে একবার হজ্জ্বে গেছেন, তাদের আমরা আমাদের ডেটাবেজ থেকে শনাক্ত করে
এবার হজ্জ্বে যেতে নিষেধ করতে পারব। তবে কোনো হাজী যদি
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি যান, তিনি নিশ্চিতভাবে জেদ্দা
বিমান বন্দরে সমস্যার মুখোমুখি হবেন এবং তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা ও আর্থিক ক্ষতি যাতে না হয়, এজন্য তিনি পাঁচ বছরের মধ্যে সৌদি যাওয়া হাজীদের এবার হজ্জ্ব করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ
জানান।
প্রসঙ্গত সৌদি
আরবে চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ১৪ অক্টোবর এ বছরের পবিত্র হজ্জ্ব পালিত হবে। হজ্জ্ব পালনের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং সরকার অনুমোদিত বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে
সৌদি আরব গমন করা যাবে। বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায়
১০ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১৭ হাজার ১৯৮ জন হজ্জ্বযাত্রী পবিত্র হজ্জ্ব পালনের
জন্য সৌদি আরব যাওয়ার টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে গত মাসে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ১০ হাজার হজ্জ্ব পালন করেছেন।
এ বছর সরকারি
ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনার হজ্জ্বযাত্রীদের জন্য জনপ্রতি বিমান ভাড়া ধরা হয়েছে ১ লাখ
২২ হাজার ৮২৭ টাকা ৫০ পয়সা। ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দর ছাড়া বেসরকারি হজযাত্রীরা চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিমানের
ফ্লাইটে সৌদি আরব যেতে পারবেন। বেসরকারি এজেন্সিগুলোকে
১ রজব থেকে ২০ শাওয়ালের মধ্যে মক্কা ও মদিনায় বাড়িভাড়া সম্পন্ন করতে হবে। মক্কায় হাজীদের জন্য একই বাড়ি বা হোটেলে অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। সৌদি বিধি মোতাবেক হারাম শরিফ থেকে দুই কিলোমিটার বা এর অধিক দূরত্বে বাড়ির ব্যবস্থা
করলে অবশ্যই যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক এজেন্সিকে ৪৫ জন হজ্জ্বযাত্রীর জন্য একজন গাইড নিয়োগ করতে হবে। আর একটি এজেন্সি সর্বনিম্ন ৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৪০০ জন হজ্জ্বযাত্রী পাঠাতে পারবে। আর হজ্জ্বযাত্রীদের সৌদি আরবের অবস্থানকালীন সময় হবে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন। প্রসঙ্গত ২০১২ সালে সরকার ঘোষিত প্যাকেজ মূল্য ছিল ৩ লাখ ৩ হাজার ৪৪০ টাকা,
যা গত বছরের ১৯ মার্চ ঘোষণা করা হয়েছিল। গতবছর পবিত্র হজ্জ্ব অনুষ্ঠিত হয় ২৫ অক্টোবর।
0 টি মন্তব্য:
Post a Comment